কালুর বউ হঠাৎ বলে বসলো “অনেক খাটছি তোমার সংসারে, আর না। এখন আমি চাকরি করবো। পড়াশোনা করে বেকার বসে থাকার কোন মানে হয়না”।
কালু অবশ্য কোন বাধাই দেয়নি। শুধু বলছে “ঠিক আছে, চাকরী করবা করো। কিন্তু সবকিছুতে সমান কন্ট্রিবিউশান করতে হবে”। কালুর বউ খুব খুশি হয়ে চাকরিতে জয়েন করলো। কিন্তু এই খুশি বেশিদিন তার কপালে জুটলোনা।
বেতন পাওয়ার সাথে সাথে কালু তার বউয়ের হাতে বাসা ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল, ওয়াইফাই বিল, গ্যাসের বিল, সোসাইটির চার্জ এমনকি ময়লার বিল পর্যন্ত split ৫০% বিলের একটা রিসিট ধরিয়ে দিয়েছে। মোট অ্যামাউন্ট ২০ হাজার টাকা। এদিকে কালুর বউয়ের বেতনই ২৫ হাজার। এরপর আবার বাচ্চাদের স্কুলের বেতনও নাকি অর্ধেক দিতে হবে। আবার কালু তার গাড়িতে করে বউকে অফিসে নামায়ে দিবেনা, দিলেও নাকি তেলের টাকা অর্ধেক দিতে হবে। হাত খরচ নিজের, বাসার বাজারের অর্ধেক টাকাও দিতে হবে।
বিলের কাগজ দেখে কালুর বউয়ের স্ট্রোক হওয়ার মত অবস্থা। কাঁদতে কাঁদতে কল দিলো নারীবাদী আন্দোলনের আরেক নেত্রীকে। ওপার থেকে ফোন ধরলো নেত্রীর স্বামী বললো “আমার টাকায় কেনা ফোন তো তাই আমি কেড়ে নিছি, পরের মাসে বউ নিজের টাকায় ফোন কিনলে আপনাকে কল দিতে বলবো”।
বাসাভাড়া, বিল আর সংসারের বাজারের খরচ এমন দাঁড়ালো যে কালুর বউ রীতিমতো হিমসিম খেতে লাগলো। পুরো বেতনের টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিয়েও তার ৫০% শেয়ারের টাকা জোগাড় হচ্ছিলোনা। তাই কালুর বউ কালুর বাসাতেই বুয়ার কাজটা ওভারটাইম হিসেবে করতে লাগলো। সারাদিন অফিসে খেটে এসে বাসায় এসে বাঁকি কাজগুলো করতে হচ্ছিলো।
একদিন কালুর বউ ভাবলো, আগে শুধু স্বামী সন্তানদের জন্য রান্না করে সংসার করেই আরামসে দিন কাটাতো সে। কিন্তু নারীবাদী ফাঁদে পড়ে একই কাজের সাথে এক্সট্রা অফিস করতে হচ্ছে। আগে যা চাইতো তাই পেতো, এখন নিজের টাকায় সব জোগাড় করা সম্ভব হয়না। আগে ছুটির দিনে স্বামীর সাথে ঘুরতে বেড়াতো, আর এখন ছুটির দিনে ওভারটাইম করতে হয় উপার্জনের জন্য। সব আরাম হারাম হয়ে গেছে।
একসময় এতেও আর হচ্ছিলোনা। কালুর বউ তাই স্বামীর কাছ থেকে ধার নিতে শুরু করলো। এভাবে ধার নিতে নিতে দেনা গিয়ে ঠেকলো ঠিক দেন মোহরের দ্বিগুণ অংকে। এখন কালু তার বউয়ের থেকে দেনমোহরের দ্বিগুণ অর্থ পায়।
এদিকে কালু ভাবলো, খরচ তো কমেছে আর ব্যাংক ব্যালেন্সও বেড়ে যাচ্ছে। এখন এই সামর্থ্য থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে না করলে জুলুম হবে। তাই কালু দ্বিতীয় বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে শুরু করলো। কালুর বউ জানতে পেরে বাসায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলো। এবং কালুকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো “এখন ডিভোর্স হলে বাসাভাড়া আর অন্যান্য খরচের পুরোটা তাকে একাই বহন করতে হবে”। তাই অগত্যা কালুর দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে বাধ্য হলো সে।
কালু দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন বউকে নিয়ে প্রতি সপ্তাহে ট্যুরে যায়। আর কালুর নারীবাদী বউ ছুটির দিনে বাসার কাজ করে কালুর দেনা শোধ করতে থাকে।